1. info@www.crimenews24.tv : Crime News 24 :
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন

কমলনগরে ইউপি চেয়ারম্যান জেলেদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪
  • ৯৮ বার পড়া হয়েছে

মোঃ নুর হোসেন
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মীর্জা আশ্রাফুল জামাল রাসেলের বিরুদ্ধে শতাধিক জেলের ভিজিএফ এর চাল আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে। এর মধ্যে গত তিন মাসে একটি ওয়ার্ডের কার্ডধারী ৪২ জেলে সরকারের বরাদ্দকৃত ভিজিএফ এর চাল পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চালের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ও বিভিন্ন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে তাদের।

সম্প্রতি এ ঘটনায় জেলেরা ভিজিএফ এর চাল পেতে এবং ইউপি চেয়ারম্যানের বিচারের দাবি জানিয়ে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূচিত্র রঞ্জন দাস।জানা যায়, মেঘনা নদীতে জাটকা ইলিশ সংরক্ষণ ও ইলিশ মাছের বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করার জন্য প্রতি বছরের মার্চ ও এপ্রিলে ২ মাস ইলিশ মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে লক্ষ্মীপুর সংলগ্ন রামগতি এলাকা থেকে চাঁদপুর জেলার ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এছাড়াও মে ও জুন মাসে জেলেদেরকে মেঘনা নদীতে জাটকা ধরতে নিরুৎসাহিত করতে সরকার ইলিশ ধরা জেলেদের ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে চাল চার মাস পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে প্রদান করছে। সুবিধা বঞ্চিত জেলে সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে গত ৪ মাসের মধ্যে ৩ মাসের চাল পাননি তারা। ওই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের জেলে হুমায়ুন কবির জানায়, ভিজিএফের চালের জন্য তারা ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি জেলেদেরকে ২ নং ওয়ার্ডের কামাল মেম্বারের কাছে পাঠান। আবার মেম্বারের কাছে গেলে চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়। পরে চাল প্রদানের নির্দিষ্ট তারিখ দিয়ে পরিষদে অনুপস্থিত থাকেন তিনি। এমনকি কয়েকদিন হযরানি করে সর্বশেষ জানিয়ে দেয়া হয়, সংশ্লিষ্ট জেলের নামে উপজেলা থেকে চাউল বরাদ্দ করা হয়নি। অথচ চেয়ারম্যান নিজেই উপজেলা থেকে তাদের নামের চাল উঠিয়ে এনেছেন। তাছাড়া কামাল মেম্বার দুদিন আগেও ১২ জনের নামে বরাদ্দ হওয়া ২৪ মণ ভিজিএফ চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।

জেলেদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান -মেম্বার দুজনেই মিলে জেলেদের চাল আত্মসাৎ করে বিক্রি করে দিচ্ছেন। ওয়ার্ডের বাসিন্দা আজিজ উল্লাহ বলেন, ২০ দিনের অভিযানে একবার চাল পেলেও পরের দুই অভিযানে আমাকে চাল দেয়নি চেয়ারম্যান। ৫শ জনের নামে চাল আনলেও চেয়ারম্যান রাসেল আমার নামে চাল নেই বলে জানিয়ে দেন। পরে চাল চাইতে গেলে আমাকে ধমক দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দেয়া হয়।

ভিজিএফ সুবিধা বঞ্চিত জেলেদের মধ্যে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, তাদের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে,পরে তারিখ দিয়ে আর চাল দেয়া হয়নি। কেউ আবার অভিযোগ করেছেন, তার কাছে ৫০০ টাকা চাওয়া হয়েছে। তিনি দিতে পারেননি বলে চালও পাননি। আবার কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, প্রথম মাসে ২০০ টাকা নিযে চাল দেয়া হলেও পরে আর টাকাও দাবি করেননি, চালও দেননি। অথচ তাদের প্রত্যেকের নামে যেমন জেলে নিবন্ধন কার্ড রয়েছে, তেমনি ভিজিএফ তালিকায়ও তাদের নাম রয়েছে। আবার অনেকে অভিযোগ করেছেন, চেয়ারম্যান তাদের কার্ড আটকে রেখেছে। তাদের কার্ড ফেরত দিচ্ছেনা আবার চালও দিচ্ছে না।

তবে চাল আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মীর্জা আশ্রাফুল জামাল রাসেল বলেন, যেহেতু কয়েকজন জেলে ইউএনও এর কাছে অভিযোগ দিয়েছে,তিনি তদন্ত করুক। দায় শুধু একা চেয়ারম্যানের না। ট্যাগ অফিসার আছে, তারা যদি চাল বিতরণ না করেন তাহলে চাল গেল কোথায়? তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হলে, আমার বিরুদ্ধে যেকোনো ব্যবস্থা নিলে আমার কোনো আপত্তি নাই। আমি কার্ড বিতরণ করি। মেম্বার সাহেবদের মাধ্যমে, চাল বিতরণ করি। ট্যাগ অফিসারের সামনে, তবে চাল বিতরণে আমি থাকিনা। ইউএনও সাহেব নিশ্চয় আমার মেম্বারদেরকে ডাকবে। আর তাদেরকে আমি কতগুলো কার্ড দিয়েছি তারা নিশ্চয় জানেন। কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, জেলেরা যথাযথ ভাবে ভিজিএফ চাল পায়নি এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি একজন অফিসারকে তদন্ত করতে দেয়া হয়েছে। উপজেলা অনুমোদিত তালিকায় নাম আছে, কিন্তু চাল পায়নি এমন কোনো নাম তদন্তে পাওয়া গেলে, সে প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়াা হবে । প্রসঙ্গত, কমলনগর উপজেলায় মোট নিবন্ধিত জেলে ১৩ হাজার ১৬৭ জন। এর মধ্যে ইলিশ ধরে এমন জেলের সংখ্যা ৭ হাজার ৫৩৩ জন। এর মধ্যে মেঘনা নদীতে ইলিশ মাছ ধরে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের জীবিকা নির্বাহকারী ও ভিজিএফ তালিকা ভুক্ত জেলে ৫৪০ জন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
© 𝟐𝟎𝟐𝟐-𝟐𝟎𝟐𝟑 𝐏𝐨𝐢𝐧𝐭 𝐌𝐞𝐝𝐢𝐚 𝐋𝐢𝐦𝐢𝐭𝐞𝐝 𝐀𝐥𝐥 𝐫𝐢𝐠𝐡𝐭𝐬 𝐫𝐞𝐬𝐞𝐫𝐯𝐞𝐝.
𝐃𝐞𝐬𝐢𝐠𝐧 & 𝐃𝐞𝐯𝐞𝐥𝐨𝐩𝐞𝐝 𝐛𝐲: 𝐏𝐨𝐢𝐧𝐭 𝐌𝐞𝐝𝐢𝐚 𝐋𝐢𝐦𝐢𝐭𝐞𝐝