এ.কে পলাশ কুমিল্লা প্রতিনিধি :
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সালিশ বৈঠক চলাকালে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এঘটনায় আহত হয়েছে আরও ছয়জন।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে উপজেলার খিলা ইউনিয়নের সাতেশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো: বাবুল মিয়া (২৭) উপজেলার খিলা ইউনিয়নের সাতেশ্বর গ্রামের সোলেমান মিয়ার ছেলে। বাবুলের আড়াই বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রবিবার সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে সাতেশ্বর গ্রামের নড়াই বাড়ি পাশ দিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে যাচ্ছিল একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে রিমন ওরফে হৃদয় মিয়া। দ্রুত গতিতে অটোরিকশা চালিয়ে যাওয়ায় ওই বাড়ির শিশুদের গায়ে ধাক্কা লাগে। এনিয়ে ওই বাড়ির বাসিন্দাসহ স্থানীয়দের সঙ্গে অটোরিকশা চালক হৃদয়ের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়৷ পরে হৃদয় ফেরার সময় ফের বিষয়টি নিয়ে ওই বাড়ির লোকজনের সঙ্গে ফের ঝামেলা হয়। ঘটনাটি সমাধানের লক্ষ্যে রবিবার সন্ধ্যার পর সাতেশ্বর পূর্বপাড়া মনতাজের দোকানের সামনে সালিশ বৈঠক বসে। এ সময় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি আবদুল মতিন, ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি এমরান হোসেনসহ গ্রামের মাতব্বররা দু’পক্ষকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু অটোরিকশা চালক হৃদয়সহ তাঁর পক্ষে থাকা রুবেল, অন্তর, সুমন, রিপন, আবদুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন এ সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে অপর পক্ষের ওপর হামলা করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এক পর্যায়ে বাবুল ও স্থানীয়রা তাঁদেরকে থামাতে গেলে হৃদয়সহ তাঁর লোকজন তাদেরকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় বাবুলকে পায়ে, পিঠে ও হাতে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের তিনি হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছেন। এ ঘটনায় গুরতর আহত দুলাল মিয়া, আবদুল মান্নান, মনির হোসেন, যুবদল নেতা এমরান হোসেনসহ ৬ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে, মনোহরগঞ্জ থানার পুলিশ ও লাকসাম সার্কেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপুল চন্দ্র দে বলেন, রবিবার রাতে লাশ উদ্ধারের পর সোমবার সকালে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ১০ জনসহ অজ্ঞাত নামা ১০/১২জনকে আসামী করে মনোহরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার প্রধান আসামী সুমনকে আটক করা হয়েছে। অপর আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।