1. info@www.crimenews24.tv : Crime News 24 :
রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৮ অপরাহ্ন

নওগাঁয় বিশাল কর্মযজ্ঞে মধ্যেদিয়ে স্বর্ণের মত দেখতে পিতলের গহনা হাতের চুড়ি বলা তৈরী হচ্ছে।

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

 

উজ্জ্বল কুমার সরকার
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি

কেউ কাটছেন পিতলের পাত। কেউ জোড়া লাগাচ্ছেন মুখ। কেউ আগুনে পুড়িয়ে ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করছেন। আবার কেউ পরিপূর্ণ চুড়ি চকচকে করতে করছেন ঘষাঘষি। বিশাল এই কর্মযজ্ঞ চোখে পড়বে নওগাঁ শহরের দপ্তরীপাড়া মহল্লায়। যেখানে পিতল দিয়ে তৈরি হচ্ছে হাতের চুড়ি বা বালা। স্বর্ণের দাম উর্ধ্বমুখী হওয়ায় ২০১২ সালে প্রথম পিতল দিয়ে চুড়ি তৈরি শুরু করেন দপ্তরীপাড়া স্বর্ণের কারিগর শেখ কামাল। প্রথমে একা কাজ করলেও বর্তমানে তার কারখানায় কাজ করে ১ হাজার শ্রমিক। যাদের অধিকাংশই নারী। মাসে ৩৬ হাজার জোড়া চুড়ি তৈরি হচ্ছে কামালের কারখানায়। এসব চুড়ি সরবরাহ হচ্ছে ঢাকা, রাজশাহী, বগুড়া, নাটোর ও ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও।স্বর্ণের মতোই দেখতে এ চুড়ি তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয় চায়না পিতলের পাত। ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে কেনা পিতলের এই পাত আনা হয় ঢাকা থেকে। প্রতি কেজি চায়না পিতলের পাত থেকে ৩৮-৪০ জোড়া চুড়ি তৈরি করেন কারিগররা। যেখানে ১ জোড়া চুড়ি তৈরিতে পাত, কেমিক্যাল, কাচা ধুপ, সরিষার তেল, গ্যাস, প্যান, বিদ্যুৎ ও শ্রমিকসহ খরচ পড়ে প্রায় ৬৫-৭০ টাকা। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি জোড়া চুড়ি বিক্রি হয় ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। সে হিসেবে শেখ কামাল প্রতি মাসে অন্তত ৬৫ লাখ টাকার চুড়ি বিক্রি করেন। এক বছরে তার বাণিজ্য হয় প্রায় ৮ কোটি টাকা। যেখানে সব খরচ বাদেও শেখ কামালের বার্ষিক আয় হয় অন্তত সাড়ে ৪ কোটি টাকা।]
এক সময় বেকার হয়ে ঘুরে বেড়ালেও গত দুবছর যাবত শেখ শিল্পালয়ে কাটিং মাস্টার হিসেবে কাজ করছেন রতন কুমার। প্রতি সপ্তাহে আয় করছেন সাড়ে ৩ হাজার টাকা। পিতলের চুড়ি তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমে শ্রমিক দিয়ে মাপমতো পিতলের পাত কেটে গোলাকৃতি দেওয়া হয়। এরপর গালা দিয়ে ভেতরের ফাঁপা অংশ ভরাটের পর নারী শ্রমিকরা নকশা করেন। পরবর্তীতে এটি গ্যাস দিয়ে পুড়িয়ে ভেতরের গালা আবারও বের করা হয়। এভাবে কয়েক হাত বদলের পর ৩ থেকে ৪ বার এসিড পানিতে পরিষ্কার করে সোনার রং দিলেই চুড়িগুলো আকর্ষণীয় রূপ নেয়। তখন আর খালি চোখে দেখে বোঝার উপায় নেই এটা স্বর্ণ নাকি পিতলের।গত ৫ বছর যাবত এ কারখানায় নকশার কাজ করছেন দপ্তরীপাড়ার গৃহবধূ ডেজী খাতুন। তিনি বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। তখন কামাল ভাইয়ের এ কারখানায় প্রশিক্ষণ নিয়ে নকশার কাজ শুরু করি। শুরুতে সপ্তাহে ৬০০ টাকা পারিশ্রমিক পেলেও বর্তমানে প্রতি জোড়া চুড়ি তৈরি করে ১৫ টাকা থেকে ২৫ টাকা মজুরি পাই। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা আয় হয়। এখানে উপার্জিত আয় থেকেই বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। ছোট ছেলেকে স্কুলে পড়াচ্ছি।নারী শ্রমিক রহিমা, সুমাইয়া ও বিথী বলেন, পিতলের চুড়ি তৈরি প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ ধাপেই নারী শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হয়। অবসর সময়ে কাজ করে এখানে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ টাকা পারিশ্রমিক পান নারীরা। এই টাকা সাংসারিক খরচ বহনে স্বামীকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি নিজের সঞ্চয়ের জন্য জমা করেন অসহায় নারীরা। অনেক নারী এ কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি এ কারখানায় কাজ করে বাড়তি আয় করছে শিক্ষার্থীরাও।শেখ শিল্পালয়ের স্বত্বাধিকারী শেখ কামাল বলেন, স্বর্ণের মতোই আকর্ষণীয় হওয়ায় বিদেশেও এ চুড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে মাঝেমধ্যেই বিদেশে চুড়ি পাঠানো হয়। ভারত ও আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চুড়ি পাঠিয়ে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। চাহিদা থাকায় নিজ নামে রপ্তানি লাইসেন্স করার চেষ্টা করছি। সরাসরি বৈধভাবে রপ্তানির সুযোগ পেলে এই চুড়ি থেকেই কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।
নওগাঁ #

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
© 𝟐𝟎𝟐𝟐-𝟐𝟎𝟐𝟑 𝐏𝐨𝐢𝐧𝐭 𝐌𝐞𝐝𝐢𝐚 𝐋𝐢𝐦𝐢𝐭𝐞𝐝 𝐀𝐥𝐥 𝐫𝐢𝐠𝐡𝐭𝐬 𝐫𝐞𝐬𝐞𝐫𝐯𝐞𝐝.
𝐃𝐞𝐬𝐢𝐠𝐧 & 𝐃𝐞𝐯𝐞𝐥𝐨𝐩𝐞𝐝 𝐛𝐲: 𝐏𝐨𝐢𝐧𝐭 𝐌𝐞𝐝𝐢𝐚 𝐋𝐢𝐦𝐢𝐭𝐞𝐝