1. info@www.crimenews24.tv : Crime News 24 :
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন

নওগাঁর বর্ষাইল চাঁদপুর গ্রামে বৃষ্টি বানু নতুন জাতের লাউ-বেগুন চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ প্রতিনিধিঃ

নওগাঁ সদর উপজেলার বর্ষাইল ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী বৃষ্টি বানু নতুন জাতের ‘লাউ বেগুন’ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। দূর থেকে দেখলে এটি লাউয়ের মতো মনে হলেও, আসলে এটি উচ্চ ফলনশীল এক ধরনের বেগুন। আকারে বড় হওয়ায় ও প্রচলিত বেগুনের তুলনায় বেশি লাভজনক হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে এটি নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বারি-১২ জাতের এই ‘লাউ বেগুন’ নওগাঁয় চাষ শুরু হয়েছে। প্রতিটি বেগুনের ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে শুরু করে দেড় কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতিটি গাছে ৭ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত বেগুন ধরছে, যা প্রচলিত জাতের তুলনায় অনেক বেশি। তাছাড়া, এই বেগুনে রোগবালাই কম হওয়ায় এবং কম সেচেই ভালো ফলন হওয়ায় এটি কৃষকদের জন্য লাভজনক একটি ফসল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

চাঁদপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম শিক্ষাগত জীবনে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও কৃষিকাজে তিনি বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছেন। প্রথমদিকে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেও তেমন সফল হতে পারেননি। পরে তিনি ও তার স্ত্রী বৃষ্টি বানু বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘মৌসুমী’-এর সদস্য হন এবং ২০২৪ সালে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর সহায়তায় ‘বারি-১২’ জাতের বেগুন চাষের প্রশিক্ষণ নেন।

প্রশিক্ষণ শেষে মৌসুমী সংস্থা থেকে ৬০০টি চারা সরবরাহ করা হয়। এরপর তারা নিজস্ব ১৫ শতক জমিতে ওই চারা রোপণ করেন। কয়েক মাসের মধ্যেই গাছে প্রচুর বেগুন ধরেছে, যা বাজারে এনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত সপ্তাহে নওগাঁ হাটে দেড় মন বেগুন বিক্রি করেছি। সাধারণ বেগুন যেখানে এখন ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা মণে বিক্রি হয়, সেখানে আমার এই বেগুন ১৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। হাটে নিয়ে গেলে সবাই জানতে চাইছে, “এটি লাউ না বেগুন?” নিমিষেই সব বিক্রি হয়ে যায়। লাভও অন্য বেগুনের তুলনায় চারগুণ বেশি।’

তার স্ত্রী বৃষ্টি বানু বলেন, ‘প্রথমবার চাষ করেই এত ভালো ফলন পেয়েছি যে আমরা খুবই খুশি। মৌসুমী সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞ, তারা আমাদের চারা ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই বেগুন চাষ করতে চাই।’

সরেজমিনে রফিকুল ইসলামের বেগুন ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের গ্রাম থেকে অনেক মানুষ এই ব্যতিক্রমী বেগুন দেখতে আসছেন। অনেকেই বলছেন, তারা এত বড় আকারের বেগুন আগে কখনো দেখেননি। স্থানীয় চাষি সবুজ হোসেন বলেন, ‘এত বড় বেগুন জীবনে দেখিনি। এক-দেড় কেজি ওজনের বেগুন বিশ্বাস করা কঠিন। আগামী বছর আমি নিজেও এই বেগুন চাষের পরিকল্পনা করছি।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘উৎপাদন ও স্বাদের দিক থেকেও এটি ব্যতিক্রমী। এই বেগুন লেট উইন্টার সবজি হওয়ায় শীতের শেষের দিকে বাজারে আসে, তাই বেগুনের দাম তুলনামূলক বেশি থাকে। ফলে কৃষকরা এটি চাষে আরও উৎসাহিত হবেন।’

নতুন জাতের এই ‘লাউ বেগুন’ চাষের সাফল্য শুধু রফিকুল দম্পতির জন্য নয়, বরং পুরো নওগাঁ জেলার কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বীজ সংরক্ষণ ও উৎপাদন প্রক্রিয়া সহজ করা গেলে এটি আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। ফলে কৃষকরা আরও লাভবান হবেন এবং দেশের বেগুন চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।
উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ
১৫-৩-২৫ ইং

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
© 𝟐𝟎𝟐𝟐-𝟐𝟎𝟐𝟑 𝐏𝐨𝐢𝐧𝐭 𝐌𝐞𝐝𝐢𝐚 𝐋𝐢𝐦𝐢𝐭𝐞𝐝 𝐀𝐥𝐥 𝐫𝐢𝐠𝐡𝐭𝐬 𝐫𝐞𝐬𝐞𝐫𝐯𝐞𝐝.
𝐃𝐞𝐬𝐢𝐠𝐧 & 𝐃𝐞𝐯𝐞𝐥𝐨𝐩𝐞𝐝 𝐛𝐲: 𝐏𝐨𝐢𝐧𝐭 𝐌𝐞𝐝𝐢𝐚 𝐋𝐢𝐦𝐢𝐭𝐞𝐝