মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু,
নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি,
নওগাঁর বদলগাছীতে উপজেলা পরিষদের  মসজিদের সাবেক সেক্রেটারী ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ম্যানেজার তার অফিসের মহিলা কর্মচারীর সাথে ফ‚র্তি করতে গিয়ে সরকারী কোয়াটারে হাতে নাতে আটক হওয়ার পর মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ছাড়া পেয়েছেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (২৬ আগষ্ট ) সরকারী ছুটির দিন বদলগাছী উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাস সরকারী কোয়ার্টারে বেলা ১১ টায়।

মসজিদের সাবেক সেক্রেটারী ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম অকপটে স্বীকার উক্তি সুত্রে জানা যায়, তিনি গত ২০২২ সালের ফেরুয়ারী মাসের ২৭ তারিখে আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পে ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বদলগাছী উপজেলা সম্মনয়কারী ও শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদান করে চাকুরী করে আসছেন। এর এক পর্যায়ে একই অফিসের মাঠ সহকারী রোজিনার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর পর থেকে তারা দুজনে একাধিকবার অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতেন। ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম তার অফিস সংলগ্ন সরকারী ৪ তলা কোয়ার্টারের দ্বিতীয় তলাতে পরিবার সহ বাস করতেন। মাঠসহকারী ১ সন্তানের জননী রোজিনা তার কোয়ার্টারের পিছনে মুকুল হোসেন নামের এক ব্যাক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ঘটনার ৩ দিন আগে ২ সন্তানের জনক ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম তার ১ ছেলে ১ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাঁকা করে নেন। ঘটনার দিন সকাল ৮ টার সময় রোজিনাকে ডেকে তার কোয়ার্টারে দ্বিতীয় তলার একটি রুমে নিয়ে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়। প্রায় ২ ঘন্টা অতিবাহিত হলে ও তারা দুজনে রুম থেকে বাহির না হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এসময় কয়েকজন সংবাদকর্মী ও স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যাক্তি বর্গ উপস্থিত হয়ে বাহির থেকে দরজা নক করেন। রুমের বাহিরে লোকজনের অবস্থান টের পেয়ে ম্যানেজার সাইদুল ও তার অফিসের মাঠসহকারী রোজিনা চরম বিপাকে পরে যায়। অনেক ডাকা ডাকি ও দরজা নক করার এক পর্যায়ে ম্যানেজার সাইদুল দরজা খুলে দিলে তাদের দুজনকে হাতেনাতে আটক করে। এর পর দরকশাকশির এক পর্যায়ে মোটা অঙ্কের রফাদফার মাধ্যমে তাদের দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। 

এ ঘটনায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অন্যান্য স্ট্যাপেরা জানান, দীর্ঘ দিন থেকে ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম ও মাঠসহকারী রোজিনার অনৈতিক সম্পর্ক চলে আসছে। তাদের এমন কু-কীর্তি তারা প্রতিনিয়ত দেখতে দেখতে হাফিয়ে উঠেছেন। তারা এমন ম্যানেজার ও মাঠসহকারীর বিভাগীয় শাস্তি দাবী করেন।

এ বিষয়ে গতকাল (২৭ আগষ্ট) সকাল ১০ ঘটিকার সময় ম্যানেজার সাইদুল ইসলামের সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাত করা হলে তিনি উপরোক্ত বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন এবং সে তার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যাবেন বলে জানান।

ভিকটিম মাঠসহকারী রোজিনার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বেলা প্রায় ১১ টার সময় ম্যানেজার সাইদুল সাহেবের কোয়ার্টারের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। এমন সময় সাইদুল সাহেব দু-তলা থেকে তাকে ডাক দেয়। তার ডাক শুনে আমি তার কোয়ার্টারে গেছিলাম নতুন একটা খাট দেখতে। খাট দেখতে রুমে ঢুকলে বাহির থেকে কিছু লোকজন এসে আমাকে সহ ম্যানেজার সাহেবকে আটক করে। পরবর্তীতে আমি সেখান থেকে চলে যাই। 

আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের জেলা আঞ্চলিক কর্মকর্তা পল্লব কুমারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি ইতিমধ্যে জেনেছি। ঘটনাটি যেহেতু উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ঘটেছে। সেহেতু উপজেলা নির্বাহী ( এইএনও) স্যারের সাথে কথা হয়েছে তিনি ব্যবস্থা নিবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসানের সাথে তার কার্যালয়ে স্বাক্ষাত করা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি আমি জানি। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়ও তিনি বলেন, সাইদুল সাহেব উপজেলা পরিষদ মসজিদের সেক্রেটারী ছিলো।এখন মডেল মসজিদ হয়েছে। সাইদুল সাহেবকে মসজিদ কমিটিতে রাখা হবে না।আজই জরুরী মিটিং ডেকে কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি করা হবে। ঘটনাটি উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।