মোঃ আতিকুর রহমান, মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলাধীন লস্করপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আঃ হক ও তার চাকুরিরত সকল নিকটাত্মীয়দের জাল-জালিয়াতির তদন্ত চায় এলাকাবাসী। বিগত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে তথ্যগোপন করে ভূয়া কাগজপত্রে অবৈধভাবে সুপার পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে চাকুরি করতেছে, এমন অভিযোগ তুলে এলাকাবাসীর পক্ষে একটি দরখাস্ত দাখিল করেন জনৈক মোহাম্মদ হোসেন। দরখাস্ত সূত্রে জানা যায়, সুপার মাওঃ আঃ হক চাকুরী জীবন শুরু করেন বরিশাল সদর উপজেলার সাহেবের হাট দক্ষিণ বিশারদ জহুরা আমেনা খাতুন দাখিল মাদ্রাসায় অফিস সহকারী (করনিক) পদে। কিন্তু তিনি তা গোপন করে লস্করপুর দাখিল মাদ্রাসায় সহ-সুপার পদে আবেদনের অভিজ্ঞতার সনদে সহকারী মৌলভী পদে চাকুরি করার কথা উল্লেখ করেন। তার এই অভিজ্ঞতার সনদটি সম্পূর্ন ভূয়া এবং জাল- জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে বলে জানান দরখাস্তকরী। এছাড়াও শিক্ষা জীবনে ৩টি ৩য় বিভাগ ও ১টিতে ২য় বিভাগ প্রাপ্ত সার্টিফিকেট থাকলেও তা জাল- জালিয়াতির মাধ্যমে তখনকার নিয়োগ কমিটিকে উৎকোচ প্রদানের মাধ্যমে সহকারী সুপারের পদটি ভাগিয়ে নেন বলে দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়। তার এই জাল- জালিয়াতি তৎকালীন কমিটির নিকট ধরা পড়লে ২২/০৮/২০১৭ সালে ১৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্টাম্পে লিখিত দেন ২১/০৭/২০১৮ সালে তিনি চাকুরি থেকে ইস্তফা দিয়ে চলে যাবেন। কিন্তু তিনি সেটা না করে ২০১৯ সালে মাদ্রাসাটির সুপার পদ শূন্য হলে নিয়ম বহির্ভূত কমিটি গঠন করে সাবেক এমপি পঙ্কজ নাথের আশির্বাদ নিয়ে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে অবৈধভাবে সুপার পদে নিয়োগ লাভ করেন বলে জানান ঐ মাদ্রাসার কমিটির সাবেক ও বর্তমান একাধিক সদস্য। যা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে ছাত্র-শিক্ষক-অভিবাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছেড়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মাদ্রাসার জমি দাতাদের ওয়ারিশ মোহাম্মদ হোসেন সুপারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে এই দরখাস্তাটি দাখিল করেন বলে তিনি জানান। সুপার মাওঃ আঃ হকের চাকুরি সময়কালীন মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ প্রাপ্ত হন। এই নিয়োগে লক্ষ লক্ষ টাকা বানিজ্যের অভিযোগ করে আসছে এলাকাবাসী। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সুপার মাওঃ আঃ হকের পুরো পরিবার জাল জালিয়াতিতে খুবই পারদর্শী। সুপারের একাধিক ভাই ও নিকট আত্মীয়রা মেহেন্দিগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিবাহের কাজী পদে নিয়োগে জাল- জালিয়াতির আশ্রয় নেবার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ২০১৩ সাথে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা সরকারিকরন করা হবে,,এমন গুজব ছড়িয়ে মেহেন্দিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক ইবতেদায়ী মাদ্রাসা কাগজ পত্রে তৈরি দেখিয়ে শিক্ষক নিয়োগের নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাজ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেবার অভিযোগ আছে সুপারের আত্মীয় স্বজনের বিরুদ্ধে। এমনকি জমি,দোকানঘর দখলের অভিযোগের কমতি নাই এদের বিরুদ্ধে। যখন যেই সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে এরা রাতারাতি সেই সরকারের লেবাস গায়ে পড়ে পূর্বের মতোই তারা জাল-জালিয়াতিতে লিপ্ত হয়ে পড়েন। এ ব্যাপারে সুপার আঃ হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, তার কাগজপত্রে কোনো সমস্যা নাই, তিনি কোনো জাল- জালিয়াতির সাথে জড়িত নয়। এলাকার সচেতন নাগরিকগন লস্করপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওঃ আঃ হকসহ তার চাকুরিরত সকল নিকটাত্মীয়ের জাল- জালিয়াতির তদন্ত করার দাবী জানিয়েছি।