রাজশাহী প্রতিনিধি :
ছাত্র-জনতার আন্দোলরেন পূর্বে ছিলেন শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে সখ্যতা থাকার কারণে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক পদ বাগিয়ে নিয়ে বাস টার্মিনাল এলাকা জুড়ে গড়ে তুলেন চাঁদাবাজি ও ত্রাসের রাজত্ব। এমনটি অভিযোগ সাধারণ শ্রমিকদের।
বলছিলাম রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক মমিনুল ইসলাম মমিনের কথা।
৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সাবেক বিএনপি ও যুবদলের কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় হয়ে গিয়েছেন কথিত শ্রমিক দল নেতা। এই পরচিয়ে তিনি এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি নানা দফতর।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর ও জেলার একাংশের ব্যানারের আয়োজিত শোভাযাত্রায় দেখা যায় শ্রমিল লীগের এই নেতাকে।
এই শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু ও কেন্দ্রীয় বিএনপির বনপরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও রাসিকের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। রাজশাহীর শীর্ষ এই দুই নেতার পেছনের সারিতে শ্রমিক লীগের এই নেতাকে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
শোভাযাত্রার অংশ নেয়া ভিডিও ও ছবি এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যে ভেসে বেড়াচ্ছে। এতে করে রাজশাহীতে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনেমিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে । অনেকেই এই কথিত নেতা মোমিনকে সুবিধাবাদী হিসেবে উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক মোমিন গত ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে বেশ সক্রিয় ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ২০১৭ সালের গত ২৪ মে সংগঠনটির ভোটগ্রহণ হয়েছিল। তবে রাতে ভোটগণনার সময় শ্রমিকদের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। নির্বাচন কমিশনারদের পিটিয়ে ব্যালট ছিনতাই, গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এসবের অভিযোগ ওঠে মোমিনেরও বিরুদ্ধে। পরে রাজশাহী জেলা যুগ্ম জজ আদালত-১ এর বিচারক সাদিয়া সুলতানা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছিলেন।
এছাড়াও রাজশাহীতে ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের জনসভায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত ও শুভেচ্ছা জানাতে লাখ-লাখ টাকা খরচ করে ব্যানার ও পোস্টার নগরীর বিভিন্ন স্থানে সাঁটান এই শ্রমিক লীগ নেতা।
মোমিনের মিছিলে যাওয়ার প্রসঙ্গে রাজশাহী জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রোকনুজ্জামান আলম বলেন, ৫ আগস্টের আগে যারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন, তারাই হঠাৎ করে মিটিং মিছিলে কৌশলে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। তবে আপনাদের নিশ্চিত করছি এই মোমিন শ্রমিক দলের কোন নেতা বা কর্মী নন। সে একজন শ্রমিক লীগ নেতা ছিলেন। সে নিজেও আমাদের কাছে দাবি করেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে যথেষ্ট পরিমাণ প্রমাণ রয়েছে আমদের কাছে ।
এবিষয়ে কথা বলতে মমিনুল ইসলাম মমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।