রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় অসুস্থ গরু জবাই করে মাংস বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে পল্লি পশু চিকিৎসক ও কসাইসহ তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একইসঙ্গে জব্দ করা ৮০ কেজি মাংস মাটিতে পুঁতে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে উপজেলার কিশামত তবকপুর গ্রামে এ অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বক্কর সিদ্দিক।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—উপজেলার পশ্চিম নাওডাঙ্গা গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে পল্লি পশু চিকিৎসক আজিমনুর রহমান (৪২), যাকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে; পশ্চিম শিববাড়ি এলাকার জসিম উদ্দিন (২৮), যাকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে; এবং উলিপুর পৌরসভার একতাপাড়া এলাকার কসাই শাহ আলম ওরফে নাদু (৩৮), যাকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তবকপুর গ্রামের সৌরভ কুমার পালের একটি গর্ভবতী গরু জটিলতায় পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি পল্লি পশু চিকিৎসককে খবর দেন। চিকিৎসক আজিমনুর রহমান গিয়ে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে বাছুর প্রসব করান। পরে গরুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসক ও গরুর মালিক পরামর্শ করে সেটি জবাইয়ের সিদ্ধান্ত নেন এবং কসাই শাহ আলমকে ডেকে আনেন।
জবাইয়ের পর গরুর মাংস নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী বিষয়টি টের পেয়ে কসাই শাহ আলমকে আটক করে এবং প্রশাসনকে খবর দেয়। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাংস জব্দ করে আদালত পরিচালনা করেন।
তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুশান্ত মণ্ডল জানান, প্রসবকালীন সময়ে গরুটি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে কসাইয়ের সহায়তায় তা জবাই করা হয়। পরে এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে তারা তিনজনকে ধরে প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে দ্রুত অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের দণ্ড দেওয়া হয়।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, গরুর মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় কসাইসহ দুই পল্লি পশু চিকিৎসককে আটক করা হয়। জনস্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা আইনের লঙ্ঘন হওয়ায় তাদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং জব্দ করা মাংস নষ্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।