বীরগঞ্জ দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মন ঠাকুর পার্শ্ববর্তী উপজেলা কাহারোলের নদাবাড়ি বিলডাঙ্গি এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও পুর্ব মল্লিকপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চাকুরীচ্যুত একজন সাবেক সহকারী শিক্ষক।
বর্তমানে বীরগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বলাকা মোড়ের অদূরে নিজে জমি ক্রয় করে বাড়ি বানিয়ে এখানকার বাসিন্দা এবং হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিবাহ রেজিস্ট্রার হয়েছেন।
জানা যায় লক্ষ্মণ ঠাকুরের প্রথম স্ত্রী মৃত্যু অঞ্জলী’র ৩/৪ বছরের শিশু ছেলে মাতৃহারা জয়ন্ত, তার বাবার কাছে বেড়ে উঠলেও তার সুশিক্ষিত ৬ মামা সব সময় চোখে চোখে রাখত, খোজ খবর নিত এবং লেখাপড়া সহ হাত খরচ বহন করত।
অভিযোগকারী শান্তানু মজুমদারের বর্ণনা মতে ইংরেজি ২০১০ সালে নির্যাতনের শিকার হয়ে তাদের একমাত্র বোনের মৃত্যুর পর থেকে লক্ষ্মণের সাথে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলেও আদরের ভাগিনার সাথে যোগাযোগ অক্ষুণ্ণ ছিল।
কিছুদিন পুর্বে ভাগিনার সাথে তার দিনাজপুর রামকৃষ্ণ আশ্রমে সাক্ষাত হয়, কথা হয়, একসাথে খাওয়া দাওয়া হয়েছে।
বোন মারা যাওয়ার কিছুদিন পরে লক্ষ্মন দ্বিতীয় বিবাহ করেছে এবং জয়ন্তের উপর সব সময় শারীরিক নির্যাতন চালায় বলে জানা গেছে।
মাতৃহারা জয়ন্তের প্রতি মামা-মামি সহ স্বজনেরা সবাই সজাগ দৃষ্টি রাখত।
সম্প্রতি লক্ষ্মনের দ্বিতীয় স্ত্রী কলহের কারনে বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
জয়ন্ত অনার্সে অধ্যয়নরত বলেন তার মামা কিন্তু লক্ষ্মন ঠাকুর জানিয়েছে ইন্টার পাশ করেছে, জাপানে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, সে কারনে বর্তমানে ঢাকায় একটি কোর্স করছিল, ৩দিন পুর্বে বাড়ি এসেছে।
গত ১২ আগষ্ট’২০২৪ দিবাগত রাতে হঠাৎ এমন দূর্ঘটনায় নিহত হবে তা বুঝে উঠতে পারি নাই।
জয়ন্তের এ মৃত্যুকে কোন মতেই মেনে নিতে পারছেন না তার মামারা সহ প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজনেরা।
মামা শান্তানু মজুমদার, নানা গোপাল চক্রবর্তী এবং অন্যান্য স্বজনেরা অভিযোগ করে বলেন লক্ষ্মন ঠাকুর ও স্থানীয় কাউন্সিলর বনমালী রায়ের যোগসাজসে জয়ন্তকে ঠান্তা মাথায় খুন করে বস্তায় ভরে রাতারাতি কাহারোল নদাবাড়ি বিলডাঙ্গী গ্রামের বাড়ি হতে মুটুনী হাটের পুর্বপাশে ঢেপা নদী শ্বশ্মানে সকলের অজান্তে তড়িঘড়ি দাহ করা হয়েছে।
তারা ১৩ আগষ্ট’২০২৪ দুপুরে জানতে পেরে ঘটনাস্থল বীরগঞ্জ এবং কাহারোল নদাবাড়ি গিয়ে সরজমিন প্রত্যক্ষ করে বিষয়টি গোয়েন্দা পুলিশ এবং অফিসার ইনচার্জ বীরগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেছেন মর্মেও জানান।
এ ব্যপারে অভিযুক্ত লক্ষ্মন ঠাকুর ও কাউন্সিলর বনমালী’র কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে একবার বলেন হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছে আবার বলেন জয়ন্ত আত্মহত্যা করেছে, সে নেশাগ্রস্ত ছিল। তাদের বক্তব্য ছিল অবিশ্বাস্য, অগ্রহনযোগ্য, সন্দেহজনক।
কিন্তু স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানায় জয়ন্ত ছিল মেধাবী, সহজ সরল শান্ত স্বভাবের।
স্বাভাবিক মৃত্যু হোক কিংবা অস্বাভাবিক মৃত্যু হোক কিন্তু কাউকে না জানিয়ে রাতারাতি অন্যত্র নিয়ে দাহ করার কারন কি?
এভাবে একটি তাজা প্রান অকালে ঝড়ে যাবে তা কোন ভাবেই মেনে নেয়া হবে না। আমরা ন্যায় বিচারসহ খুনিদের শাস্তি দাবী করছি।
এ ঘটনায় মৃত কালিপদ মজুমদারের পুত্র নিহত জয়ন্তের মামা স্বপন মজুমদার বাদী হয়ে লক্ষ্মন, তার ভাই দীপু চক্রবর্তী, মধু চক্রবর্তী, ভাগ্নে লিটন ও কাউন্সিলর বনমালী রায়ের বিরুদ্ধে গত ১৬ আগষ্ট’২৪ থানায় হত্যা মামলার এজাহার দাখিল করেছেন।
কিন্তু ঘটনার ৯/১০ দিন অতিবাহিত হলেও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় বাদি এবং তার স্বজনরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
জবাবে লক্ষ্মণ বলেন আমাকে কাউন্সিলর বনমালী রায় ফাঁসিয়েছে, আমার কোন দোষ নাই।
এসব জামেলা এড়াতে কাউন্সিলর আমার নিকট নগদ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা এবং সাদা কাগজ ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছে।
এ ব্যপারে অফিসার ইনচার্জ বীরগঞ্জ থানা মোঃ মজিবুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনাটি তিনি অবগত আছেন।