জোবায়ের আলম সৈকত
সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের একটি বাসে ভাঙচুর চালিয়েছেন এমন অভিযোগে সায়েন্সল্যাব মোড়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং আশেপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে পুলিশ।
জানা গেছে, সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজের ছাত্ররা একটি বাস ভাঙচুর করে। এর পরপরই সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনার পরপরই পুলিশ- সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, তবে এখনও উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে।
ঠিক কী নিয়ে এ সংঘর্ষ, সেই বিষয়ে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশের তদন্ত অব্যাহত আছে।
সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দুই কলেজের চার শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তারা হলেন সিটি কলেজের শাহরিয়ার (২১) ও নূর হোসেন (২৪) এবং ঢাকা কলেজের মো. তুষার (১৮) ও অনিম (২১)।
বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন ।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সকালে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে একা পেয়ে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা মারধর করেন। এছাড়া দুপুরে ঢাকা কলেজের একটি বাসে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে কাচ ভেঙে দেওয়া হয়।
ঢাকা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জুবায়ের আরেফিন প্রিয় অভিযোগ করেন, আজ আনুমানিক দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কলেজ থেকে হেঁটে বাসায় ফেরার সময় ধানমন্ডি ১ নম্বর রোডে ১০-১৫ জন কলেজ ছাত্র দৌড়ে এসে আমার মাথার পেছন দিকে আঘাত করতে শুরু করে। শার্টের পকেট ছিঁড়ে আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয়। আমি তাদের বলি, ভাই আমি তো কিছুই করিনি, তাহলে কী সমস্যা। তারা বলল, এইটা কলেজে কলেজে মারামারি, তুমি বুঝবে না। ছেলেগুলো কলেজ ড্রেস পরে ছিল কিন্তু গলায় কোনো আইডি কার্ড ছিল না। সাদা শার্ট-কালো প্যান্ট ও ঘাড়ে ব্যাগ ছিল। আশপাশের মানুষের মন্তব্যে বোঝা গেছে তারা সিটি কলেজের ছাত্র।
এর আগে, ২৮ অক্টোবর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। তারা অভিযোগ করেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী মোহাম্মদ নিয়ামুল হক ও উপাধ্যক্ষ মো. মোখলেছুর রহমান নানা স্বেচ্ছাচারিতা, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় এবং বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছেন। সেজন্য এসব বিষয়ে যৌক্তিক সমাধান চেয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। সেই ছাত্র আন্দোলন ঠেকাতে দীর্ঘ ২০ দিন বন্ধ রাখার পর ১৯ নভেম্বর কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম চালু হয়।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়টি নিয়ে উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা কর্মকর্তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।